সুদানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ওপর ড্রোন হামলার ঘটনায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হওয়ার ঘটনা বিশ্বব্যাপী গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা সংঘটিত হয় রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে, যখন সুদানের কাদুগ্লিতে জাতিসংঘের একটি ঘাঁটিতে অবস্থিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর এই জঙ্গি হামলা চালানো হয়। আহত ও নিহতের এই ঘটনা জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের গভীর নিন্দা ও উদ্বেগের কারণ হয়েছে। তিনি প্রকাশ করেছেন, এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে থাকতে পারে এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর এটি একটি অপ্রত্যাশীত এবং অগ্রহণযোগ্য আঘাত। তিনি সব পক্ষকে সতর্ক করে দেন, যেন শান্তিরক্ষী ও সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি, তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। এই হামলার বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসও কঠোর ভাষায় নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটি একটি ‘বৈশ্বিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ’। গত শনিবার সুদানের আবেই অঞ্চলের কাদুগ্লিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে, যেখানে ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আফটার ড্রোন হামলায় প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কর্পোরাল মো. মাসুদ রানা, সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম, সৈনিক শামীম রেজা, সৈনিক শান্ত মণ্ডল, ওয়েটার জাহাঙ্গীর আলম এবং মো. সবুজ মিয়া। এই ঘটনার পর সুদানের সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)-কে দায়ী করেছে। সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এ হামলাকে ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধি’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলছেন, এটি দেশটির অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাড়িয়ে দিতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিলে ক্ষমতার টানাপোড়েনের জেরে সুদানে শুরু হয় সশস্ত্র সংঘাত, যা এখনও অব্যাহত। রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন অঞ্চলে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, হাজারো প্রাণ হারাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
