মারাদির পুত্রকে নিয়ে কেট উইন্সলেট আবার দেখাচ্ছেন তার ক্রিসমাসের জনপ্রিয় সিনেমার স্বাদ। দীর্ঘ দুই দশক পর তিনি ফিরে আসছেন নতুন একটি ক্রিসমাস ছবির মাধ্যমে, যার নাম ‘গুডবাই জুন’। এই সিনেমা মূলত জীবনের অতীত এবং বর্তমানের মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে তৈরি। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার অভিনীত রোমান্টিক কমেডি ‘দ্য হলিডে’ দিয়েই তিনি ক্রিসমাসের একটি জনপ্রিয় চেহারা তৈরি করেন, যা এখনও অনেক পরিবারের ঘরে ঘরে দেখা হয়। তবে নিজের পরিবারে পুরোপুরি এই ছবিটি দেখা হয়ে ওঠেনি। তিনি স্বীকার করেছেন, “না, আমরা বহু বছর ধরে ‘দ্য হলিডে’ দেখি না। আমরা একসঙ্গে বসে আমার অভিনীত ছবি দেখি না।” তিনি জানান, নিজের অভিনীত বেশিরভাগ ছবিই তিনি একবারই দেখেছেন। এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তার নতুন ছবি ‘গুডবাই জুন’ এর সূচনা অনুষ্ঠানে। এই সিনেমাটি তার জন্য বিশেষ কারণ হলো, এটি তার প্রথম পরিচালনাও। এর চিত্রনাট্য লিখেছেন তার ছেলে জো অ্যান্ডার্স, যা তার নানি সেলির মৃত্যুর স্মৃতি থেকে অনুপ্রাণিত। ২০১৭ সালে তার মা ক্যানসারে মারা যান। সিনেমায় দেখানো হবে কিভাবে এক পরিবার মায়ের প্যালিয়েটিভ কেয়ার চলাকালে অতীতের দ্বন্দ্ব ভুলে একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করে। উইন্সলেট বলছেন, “এটা মৃত্যুর গল্প না। বরং এটি বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প। মানুষ এই সিনেমাকে অত্যন্ত জীবন্ত বলে মনে করছেন।” সঙ্গে স্পষ্ট করে বললেন, এই সিনেমা তার প্রথম পরিচালনাও, যেখানে তার দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবকাশ উদযাপিত। তিনি আরো বললেন, ‘মায়েদের জন্য এই কাজটি খুবই কঠিন। পরিচালক হওয়া মানে অনেক বেশি ব্যস্ততা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সময়টা এসেছে।’ তিনি বলেন, নারীবাদী পরিচালকদের নিয়ে অনেক সময় সমাজে সন্দেহের চোখে দেখা হয়, ‘ক্যামেরার কাজ জানে তো?’, ‘প্রযুক্তি বোঝে তো?’—এই ধরনের প্রশ্ন ওঠে। তার জবাব, ৩৩ বছরের অভিনয় জীবনে তিনি নিজে ক্যামেরার ভাষা শিখে নিয়েছেন। এর পাশাপাশি প্রশ্ন করা হয়, কেন হলিউডে নারীবান্ধব পরিচালকদের সংখ্যা কম। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর যুক্তরাজ্যে শীর্ষ ১০০ সিনেমার মধ্যে মাত্র ১৬টিই নারী পরিচালকের, বাকি ৮৪টি পুরুষ পরিচালকের। এই পরিস্থিতির জন্য তিনি সমাজের মাতৃত্বের চাপ ও নারীর সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, “নারীরা খুবই সক্ষম, সহনশীল, কম ঘুমিয়ে কাজ চালাতে পারে এবং সফলতা অর্জন করতে পারে।” ‘গুডবাই জুন’ সিনেমাটি ১৩ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে এবং ক্রিসমাসের দিন নেটফ্লিক্সে দেখা যাবে। অন্যদিকে, ‘দ্য হলিডে’ দেখা যাবে বিবিসি আইপ্লেয়ারে। এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি একজন নির্মাতার পরিচয় তুলে ধরছেন, যা সমাজে নারীদের সক্ষমতার এক নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে।
