বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার ৩২.১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য এক সুখবর। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর নির্ধারিত বিপিএম-6 পদ্ধতিতে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭.৪৫ বিলিয়ন ডলার। গত বুধবারের রিজার্ভ ছিল প্রায় ৩১.৮৯ বিলিয়ন ডলার, আর বৃহস্পতিবার তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এই সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ১০ ডিসেম্বরের রিজার্ভ ছিল लगभग ৩১.৮৯ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম-6 পদ্ধতিতে তা ছিল ২৭.২২ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে, ৬ নভেম্বর দেশের রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল। ওই সময় রিজার্ভ ছিল ৩২.৭১ বিলিয়ন ডলার, আর বিপিএম-6 পদ্ধতিতে ছিল ২৮ বিলিয়ন ডলার।
তবে, তিন দিন পর, ৯ নভেম্বর, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের জন্য ১৬১ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই দায় পরিশোধের পর দেশের গ্রস রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩১.১৪ বিলিয়ন ডলারে। এরপর থেকে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল সাধারণত ৩০ থেকে ৩১ বিলিয়নের মধ্যে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২ সালের জুলাইয়ে, অর্থাৎ মে-জুনের আমদানি ব্যয়ের বিপরীতে, আকুতে বাংলাদেশ ১.৯৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছিল যা ছিল এই প্রথম বড় অংকের বিল। এরপর, ২০২৩ সালে শতবর্ষের মধ্যে রিজার্ভের পরিমাণ একাধিকবার কম-বেশির মধ্যে উঠানামা করেছে।
বিশেষ উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের সময় আকু বিল আবার বেড়ে ২ বিলিয়নের কাছাকাছি চলে আসে, যা এই তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন (ইউএনইএসক্যাপ) এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। এই সংস্থা এর মাধ্যমে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা—মোট নয়টি দেশ—আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি করে।
অন্যদিকে, দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে ও রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার কিনছে। গতকাল, অর্থাৎ ১১ ডিসেম্বর, দেশের ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি মার্কিন ডলার (১৪৯ মিলিয়ন ডলার) সংগ্রহ করা হয়েছে। তখন প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২২.২৫ থেকে ১২২.২৯ টাকা, যা সেটেলমেন্টের জন্য নির্ধারিত কাট-অফ রেট৷
২০২৫-২৬ অর্থবছরে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে মোট ২৬৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার (প্রায় ২.৬৬ বিলিয়ন ডলার) কিনেছে। এই নিলাম কার্যক্রম ১৩ জুলাই শুরু হয় এবং এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত এই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে।
