সবজির বাজারে আগুন, মাছের দামও বেড়ে গেছে – Daily Bhorer Potrika

সবজির বাজারে আগুন, মাছের দামও বেড়ে গেছে

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫

শীতের মৌসুমে সবজির বাজারে ভরা থাকলেও সাধারণ ক্রেতাদের জন্য দাম বাড়ার অবস্থা চরমে পৌঁছেছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, সবজি থেকে শুরু করে মাছ ও মাংস—সবকিছুর দামই দিনের পর দিন ঝড়ের গতিতে বাড়ছে। এতদিন পাকস্থলীর তালিকা অনুযায়ী বাজারের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নয় বলে মনে করা হলেও, বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। পাইকারি বাজারে সামান্য পরিবর্তন থাকলেও খুচরা বাজারে একেবারে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে, যার ফলে সাধারণ ক্রেতারা অতিরিক্ত দামে পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এই অস্বাভাবিক দামের কারণে সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাজার পরিদর্শনে জানা যায়, বেশিরভাগ সবজির দাম এখনো প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, তবে এর মধ্যে বেশ কিছু পণ্যের দাম আরও বেশি। অন্যদিকে, মাছের দামেও স্বস্তি নেই। মাঝারি আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হলেও, বিভিন্ন শাকসবজির দাম ৮০ টাকায় পৌঁছাচ্ছে। বেগুন, গাজর, শশা, কাঁচা মরিচ এবং নতুন আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ঝিঙা ও শিমের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ও করলা ১০০ টাকায় বিক্রি।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই মাছ (মাঝারি) ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২0 থেকে ২৫0 টাকা এবং বড় চিংড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই অধিক দামে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য বিভ্রান্তি ও আর্থিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে, মুরগির দামেও উত্থান হয়েছে। বয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৮০ টাকা, লেয়ার ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৬০০ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, আর খাসির মাংস ১,১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শান্তিনগর বাজারে আসা ক্রেতা আমিল মিয়া জানান, শীতের সময় সাধারণত সবজির দাম কমার কথা থাকলেও, এ বছর তার ঠিক উল্টো। দাম বেশি থাকায় আগে যেখানে এক কেজি সবজি কিনতেন, এখন অর্ধেকের বেশি কিনতে হয়। পরিবারের বাজেট সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

মালিবাগ বাজারের ক্রেতা বেনু সূত্রধর অভিযোগ করেন, বছর জুড়ে মাছের দাম খুবই বেশি, যা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টকর।

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহের ঘাটতি ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। মালিবাগ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আসাদ আলী জানান, পাইকারি বাজারে সরবরাহ কম থাকায় তাকে বেশি দামে কিনতে হয়।

যাত্রাবাড়ী আড়তের ব্যবসায়ী নাঈম আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক টানা বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে গাছ নষ্ট হওয়ার ফলে ফলন কমে গেছে, তাই দাম আরও বাড়ছে। এছাড়া, পাইকারি থেকে খুচরা পণ্য বিক্রিতে বিভিন্ন ধাপে উপস্থিত হওয়া দাম বাড়ছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মৌসুমি সবজির উঠানের পাশাপাশি বাজারে যদি যথার্থ ব্যবস্থা ও সরবরাহ স্বাভাবিক না হয়, তাহলে এই উচ্চমূল্যের চাপ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ভোক্তাদের পক্ষে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।