বিশ্বের অন্যতম তেল সম্পদে ভরপুর দেশ ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকে এ ঘোষণা দেন। ট্রাম্পের মতে, ভেনেজুয়েলার ভেতরের মাদক ব্যবসা ও অবকাঠামোই এই হামলার মূল লক্ষ্য।
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভেনেজুয়েলার মাদক কারবারিরা বিপুল পরিমাণ ফেনটানিল উৎপাদন করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে, যেখানে এই মাদক সেবনে প্রতি বছর হাজারো মার্কিন মৃত্যু হচ্ছে। তিনি আরও জানান, শুধু গত বছরেই এই মাদকসেবনের কারণে দুই লক্ষ মার্কিনি মারা গেছে।
প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা বিপুল দেরিতে নৌপথে হামলা শুরু করেছি, তবে খুব শিগগিরই স্থলে অভিযান চালাবো। তিনি উল্লেখ করেন, স্থলভূমিতে হামলা করা অনেক সহজ, কারণ তারা এর পথ চেনে। ট্রাম্পের ভাষ্য, মাদক চোরাচালানের জন্য ব্যবহৃত সব পথ আমরা জানাতে পারি এবং যেখানে এসব চোরাকারবারি লুকায় তা খুব সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি নিশ্চিত করে বলেন, খুব শিগগিরই এ সব অপশক্তির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেওয়া হবে।
অজানা নয় যে, সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার ওপর কঠোর চাপ আর চাপ প্রক্ষেপণ চালাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ক্যারিবীয় সাগরে বিপুল সংখ্যক মার্কিন নৌবাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি, গত সেপ্টেম্বরে বেশ কিছু মাদকবোঝাই নৌকা আটক ও আক্রমণ করেছে মার্কিন সেনারা। তারা সতর্কবার্তা দিয়েছে যেন কোনওভাবে এই সমুদ্রপথে মাদক পাচার না হয়।
এদিকে, মার্কিন সামরিক শক্তির উপস্থিতি ও চলমান চাপের মধ্যে ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা যুদ্ধজাহাজ ও সেনা জড়ো করে আকাশে ও সমুদ্রে ভেনেজুয়েলায় আঘাত হানার পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে কিছু নৌকা ও জাহাজ লক্ষ্য করে মার্কিন হামলার ভিডিওও প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে দেখা যায়, একটার মধ্যে কয়েকজন নিহত হচ্ছে। তবে মার্কিন প্রশাসন এ সব ছবি ও ভিডিওকে অস্বীকার বা গুলিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ব্যাপারে বলেছেন, মাদক চোরাকারবারিরা গত বছর দুই লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। আমরা এ সংখ্যা কমিয়ে আনতে কাজ করছি। তারা ছুরি, কাঁচি বা অন্য কিছু দিয়ে আমাদের ন্যাগত সকল অরূঢ় দমন করব। আমরা আর মাদক আমাদের দেশে প্রবেশ করতে দেব না।
ভেনেজুয়েলা ও মার্কিন সম্পর্কের অবনতির এই পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর চাপের মুখে তারা নিজেদের সেনাবাহিনী প্রস্তুত করছে। তিনি বলেছেন, তারা ২২ সপ্তাহ ধরে অব্যাহতভাবে আত্মঘাতী চাপ ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালাচ্ছে। প্রসঙ্গত, ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পাশাপাশি কয়েকটি হামলার খবরও রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির নাগরিকরা উদ্বেগে আছে, এবং অনেকেই মনে করছেন, ভেনেজুয়াকে ঘিরে আরও বড় ধরনের আক্রমণ আসতে পারে।
