শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য ভারতে গেল সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ – Daily Bhorer Potrika

শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য ভারতে গেল সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫

শারদীয় দুর্গোৎসবের পবিত্র অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ভারতে রপ্তানি করা হলো সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ। মঙ্গলবার রাতে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আটটি ট্রাকের মাধ্যমে এসব ইলিশ পাঠানো হয়। বেনাপোল বন্দর মৎস্য কোয়ারেন্টিন কর্মকর্তা সজীব সাহা জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থা—সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজ, ও লাকী ট্রেডিং—এই ইলিশ রপ্তানির জন্য অনুমোদন পেয়েছে। ভারতের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আরজে ইন্টারন্যাশনাল। এই রপ্তানির মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বন্ধুত্ব আরও গভীর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া, দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে এক হাজার ২০০ টন ইলিশ নিয়ে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এই জন্য নির্ধারিত ন্যূনতম দাম প্রতি কেজি সাড়ে ১২ ডলার। তবে, সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারিত হয়নি। মোট ৩৭টি প্রতিষ্ঠান এই অনুমোদন পেয়েছে, যাদের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে, ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে, এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত পরিমাণের বেশি রপ্তানি বা অন্য কোনো কোম্পানির হাতে এই অনুমোদন হস্তান্তর করা যাবে না। রপ্তানি অনুমতিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার যদি মৎস্য আহরণ ও পরিবহন সংক্রান্ত কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করে, তাহলে এই অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সরকার প্রয়োজন বিবেচনায় রপ্তানি বন্ধ বা পুনরায় শর্তাবলী পরিবর্তনও করতে পারে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর ইলিশ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হলেও, ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে ২০১২ সাল থেকে সরকার রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু এই সময়ে দুর্গা পূজার মরশুমে বিশেষ পরিস্থিতিতে ভারতের বাঙালিদের জন্য ইলিশের রপ্তানি আবার শুরু হয়েছে। অধিকাংশ ইলিশ এই বন্দর থেকে ভারতে পাঠানো হয়। গতবছর ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন ছিল ২ হাজার ৪২০ টন, কিন্তু বাস্তবে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৫৩২ মেট্রিক টন।

২০২৩ সালে, ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৬৩১.২৪ টন। ২০২২ সালে ৫৯ প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ২,৯০০টনের, কিন্তু বাস্তবে রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১,৩০০ টন। অন্যদিকে, ২০২১ সালে এক হাজার ১৫টি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ছিল ৪,৬০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ১,৬৯৯ টন। মহামারি করোনার মধ্যে ২০২০ সালে দুর্গাপূজার জন্য অনুমোদিত ছিল ১,৪৫০ টন, কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানই পুরোপুরি পাঠাতে পারেনি। এর আগে, ২০১৯ সালে ৫০০ টনের অনুমোদন থাকলেও রপ্তানি নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন হয়েছিল ৪৭৬ টন।

ইলিশ রপ্তানিকারক ও স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজের সাইফুল ইসলাম বলেন, এবারের ইলিশের ওজন ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত, এবং এই দাম সরকার নির্ধারিত দামে পাঠানো হয়েছে। তিনি আশা করেন, এই রপ্তানি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও সৌহার্দ্য সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।