দীর্ঘ দেড় মাস পর জনসম্মুখে জামায়াতের আমির – Daily Bhorer Potrika

দীর্ঘ দেড় মাস পর জনসম্মুখে জামায়াতের আমির

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫

অসুস্থতার পর প্রায় দেড় মাস পরে শনিবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জনসম্মুখে এসেছেন। তিনি এ সময় মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে ধন্যবাদ জানান, সুস্থ হয়ে আবারও জনগণের সামনে কথা বলার সুযোগ পাওয়ায় তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ঢাকা-১০ আসনের কাফরুল দক্ষিণ থানার উদ্যোগে আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এই উপলক্ষ্যে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় পর আবার মিডিয়ার সামনে দাঁড়ানো সম্ভব হওয়ায় আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি উল্লেখ করেন, আল্লাহ তৌফিক না দিলে আমি এত দ্রুত সুস্থ হয়ে জনসম্মুখে আসতে পারতাম না। যেনো এই সময়টাতে আমার মনে হয়েছে, আমার দায়িত্ব এখন জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলা। এটি আমি শুধু নিজের জন্য না, সকলের জন্য আহ্বান রূপে মনে করেছি।

নিজের অসুস্থতা সম্পর্কে তিনি বলেন, সমাবেশের দিন আমি পড়ে যান, তখন দেশের মানুষ টিভি আর মোবাইলের মাধ্যমে ঘটনা দেখছিলেন। তখন ইউনাইটেড হসপিটালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মমিনুজ্জামান আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আমার সমস্যাটা মস্তিষ্কজনিত নয়, বরং হৃদপিন্ডে হতে পারে। পরে তিনি আমাকে চিকিৎসা নিতে উদ্বুদ্ধ করেন।

ডা. শফিকুর রহমান জানান, তাঁর স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ২২ জন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন হয়। তারা হৃদযন্ত্রে ব্লক শনাক্ত করে ও ঝুঁকির কারণে দেশের বাইরে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ডাক্তাররা সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক বা আমেরিকার মতো দেশের নাম বললেও আমি প্রশ্ন করি, আল্লাহ কি শুধু সেখানেই আছেন? তারা বলে, আল্লাহ সর্বত্র আছেন। তখন আমি বুঝতে পারি, আল্লাহ যদি সেখানেও সুস্থতা দান করতে পারেন, তবে নিজের জন্মভূমি বাংলাদেশেও তিনি এত সহজে সুস্থতা দিতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, সুস্থতা বা অসুস্থতা কার হাতে তা শুধুমাত্র আল্লাহর হাতে। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহই আবার আমাকে জনসম্মুখে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছেন। আমি আবারও বলতে চাই, এই সময় এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা আমি শুধু আল্লাহর তৌফিকেই পেয়েছি।

প্রসঙ্গত, এর আগে ১৯ জুলাই রাজধানীর এক সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বক্তব্যের মাঝপথে মঞ্চে পড়ে যাওয়ার পর উপস্থিত নেতাকর্মীরা তা দ্রুত সামাল দেয়। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়ে বক্তব্য চালিয়ে যান। এরপর তাঁকে দ্রুত ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেয়া পরীক্ষায় তাঁর রক্তচাপ, গ্লুকোজ ও হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে জানা গেছে। তবে সতর্কতার জন্য ওই দিনই তাঁকে হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

দীর্ঘ দেড় মাসের পর আবার জনসম্মুখে ফেরায় তার সুস্থতা নিয়ে দলের ভেতরে স্বস্তি দেখা গেছে। জামায়াত নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের স্বাস্থ্যের বিষয়ে জনমত তৈরি হয়েছে, যা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বাড়াতে সহায়ক হবে।