জুলাই ঐক্য সম্প্রতি আরও একবার কঠোর আলটিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে। তারা জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভারতের বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিষিদ্ধ না করলে তারা কঠোর আন্দোলন চালাবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হলো গত কয়েক মাসে এই দলগুলোর নানা অপকর্ম, বিশৃঙ্খলা ও অস্ত্রেরাস্থান লুকানোর খবর।
জুলাই ঐক্য গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে অন্তত ৮০টি সংগঠন, শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা নিজ নিজ মতামত দিয়েছেন। এর আগে ১৩ মে ঢাকায় মধুর ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে তারা ঘোষণা করেছিল, আওয়ামী লীগের সহযোগী ১৪ দলকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে। গত তিন মাসে তারা লক্ষ্য করেছে যে এই দলগুলো নানা অপকর্মে লিপ্ত, দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রের মজুত রয়েছে।
সংগঠনের দাবি, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারসহ সাধারণ মানুষের মনে গাজীপুরে আওয়ামী লীগের অত্যাচার, গণহত্যা ও গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য এই ১৪ দলের অবদান রয়েছে। তারা বলেছে, জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য দলগুলো প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দুর্গতি ও ভোটের নামে প্রহসন চালিয়েছে।
জুলাই ঐক্য মনে করে, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে এসব দলকে বৈধতা দিলে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। তারা দাবি করে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও কার্যকর হয়নি। তারাও অভিযোগ করেন, পুলিশ ও সরকারি দলে দুর্বলতা থাকায় এই সকল অপকর্ম চালাচ্ছে सरकारी নজরদারির বাইরে।
সংগঠনের মতে, যদি ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই দলগুলো নিষিদ্ধ না হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না হয়, তবে তারা গৃহীত কঠোর পরিণামের জন্য প্রস্তুত। তারা ঘোষণা করে, গণবিস্ফোরণ ও রাজপথে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে দাবি আদায় করব। এই দাবি তাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি, কারণ ইতিহাসের পাতা ওলটানোর পর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল নিজেদের অপকর্মের জন্য জবাবদিহি থেকে বাঁচতে পারে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই সব সংগঠনের বিরুদ্ধে বিচার চলা পর্যন্ত তাদের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দেখা যাচ্ছে, সরকারের অক্ষমতার কারণে এই দলগুলো অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। অস্ত্রের মুখে নানা অপকর্মে লিপ্ত এই দলগুলো এখনো প্রকাশ্যে মিছিল ও সামরিক অপকর্ম চালাচ্ছে।
অতএব, সংগঠনটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা এই অবস্থা চলতে দিতে পারবে না। যদি সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এবং ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা না হয়, তাহলে তারা কঠোর আন্দোলনের পথে নামবে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা দাবি করবে—অন্তর্বর্তী সরকার যেন দ্রুত এই অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং বিচার সম্পন্ন হয়। অন্যথায়, তারা জানিয়ে দিয়েছে, এখনও গড়িমসি হলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে জনগণের আক্রোশ নিবে।