সবজির পর মুদি পণ্যের দামেও বৃদ্ধি; আলুর বাজারও চড়তে পারে – Daily Bhorer Potrika

সবজির পর মুদি পণ্যের দামেও বৃদ্ধি; আলুর বাজারও চড়তে পারে

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ৩০, ২০২৫

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে সবজির দাম খুবই চড়া হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে মুরগি, ডিম এবং পেঁয়াজের দাম ইতিমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। এবার নতুন করে মুদি পণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে মসুর ডাল, আটা এবং ময়দার দাম আরও বেড়েছে। বাজারের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভোক্তাদের জন্য আলুর দামও বাড়ার আশংকা রয়েছে।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। তিন-চার দিন আগে প্যাকেটজাত এক কেজি আটা কোম্পানি অনুযায়ী ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। অন্যদিকে, খোলা আটা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। একইভাবে, ময়দার দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে বর্তমানে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা ময়দা বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকাতে।

বাজারে বেশ মানসম্পন্ন মসুর ডালের দাম ইতিমধ্যে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় উঠেছিল, এখন তা বেড়ে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা হয়েছে, অর্থাৎ প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। বড় দানার মসুর ডালের দামও বাড়ছে এবং খুচরা বাজারে এখন ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

চড়া দামে আটকে থাকা সবজির দামও বেশ ধারাবাহিক রয়েছে। এক কেজি বেগুন এখনো ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, করলা প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা, কচুর মুখি ৮০-৯০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা এবং চিচিংগা-ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। কাঁচামরিচের দাম ২০০-২৫০ টাকার মধ্যে অবস্থান করছে।

পেঁয়াজের বাজারেও দাম বেশ স্থির, যদিও আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি। এখনো প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। তালতলা বাজারের বিক্রেতা বুলু মিয়া বলেন, ভারত থেকে আনা পেঁয়াজের দামও বেশি। এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে দেশীয় পেঁয়াজের সমান দামে, ফলে আমদানির অবস্থা বাজারে বেশ প্রভাব ফেলতে পারে না। কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায়, আর দেশীয় পেঁয়াজ ৬৫-৭২ টাকায়।

অন্যদিকে, উচ্চমূল্যে থাকা ডিম ও মুরগির দামও এখনো চড়া অবস্থায়। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকার মধ্যে, তবে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহেও এই দামে বিক্রি হত। মুরগির প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়।

আলুর দাম বাড়ার সম্ভবনা থাকছে, কারণ চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা গত কয়েক মাস ধরে লোকসানে ছিলেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার হিমাগারে আলুর ন্যূনতম মূল্য ২২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে এখনো আলুর আসল দাম তেমন বাড়েনি, এবং বাজারে সেটার প্রভাব পড়েনি। তবে ভবিষ্যতে কিছুটা দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

তারা বলেন, এর আগে আলুর হিমাগারে বিক্রি হয় ১২-১৫ টাকায় কেজি। এখন সরকার মূল্য নির্ধারণের পরে হিমাগার গেটের দাম ২২ টাকায় পৌঁছেছে, যেখানে ব্যবসায়ীরা সেটি ক্রয় করছেন কমপক্ষে ২৪ টাকায়। খরচ যোগ করে বিক্রি করতে হলে প্রায় ২৭-২৮ টাকায় বিক্রি করতে হবে। এর ফলে বাজারে আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে—হু। বর্তমান বাজারে আলুর দাম এখনও ২৫-৩০ টাকার মধ্যে পর্যটিত।

চালান অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট কৃষি মন্ত্রণালয় আলুর হিমাগার গেটের জন্য নতুন মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে, তবে খুচরায় সর্বোচ্চ দাম ঠিক করা হয়নি, সেটি ভবিষ্যৎ বাজারের ওপর নির্ভর করবে।

কারওয়ান বাজারের আড়তদার জাহাঙ্গীর বলেন, সরকারের দাম নির্ধারণের পরও কিছুটা দাম বেড়েছে। এখন তারা সাড়ে ১৫ টাকায় আলু বিক্রয় করছেন। হিমাগার গেটের দাম ২২ টাকায় পৌঁছার সময়, অবশ্যই তারা সেটি কমপক্ষে ২৪ টাকা কেজি দরে কিনবেন, আর খরচ যোগ করে বিক্রি করবেন ২৭-২৮ টাকা কেজি। এর ফলে খুচরে দামের সামান্য বৃদ্ধি হবে। ব্যবসায়ীরা মত প্রকাশ করেছেন, সম্ভবত খুচরা বাজারে আলুর দাম আরও ৩৫-৪০ টাকা প্রতি কেজি পর্যন্ত উঠতে পারে। তবে তারা মনে করেন, সরকারের মনিটরিং থাকলে বাজারে দাম আরও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এখনো আলুর দামে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি, দাম এখনও ২৫-৩০ টাকার মধ্যে রয়েছে।