৩ জেলার যৌথ সীমান্তে প্রায় ২০০ পরিবারের বসবাস, অবহেলায় পড়ে রয়েছেন তারা – Daily Bhorer Potrika

৩ জেলার যৌথ সীমান্তে প্রায় ২০০ পরিবারের বসবাস, অবহেলায় পড়ে রয়েছেন তারা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ২৫, ২০২৫

মানিকগঞ্জের খাঁর চর, পাবনার ঢালার চর এবং রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ চর— এই তিন জেলার মিলনস্থলে রয়েছে প্রায় ২০০ পরিবারের বসতি। এরা তিন জেলার অংশ হলেও তাদের কোনও official খোঁজখবর বা সরকারি সহায়তা পৌঁছে না। এই চরগুলোতে বিদ্যুৎ, সড়ক যোগাযোগ, হাসপাতাল— কিছুই নেই। শিশুদের জন্য থাকা একমাত্র বিদ্যালয়টি অবস্থিত প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে, সেখানে পৌঁছানো যেন এক দুরূহ অভিজ্ঞতা। এসব কারণেই সামাজিক মাধ্যমে অনেক তরুণ এ অঞ্চলকে অভিহিত করেছেন— “নিরক্ষর তৈরির কারখানা” বলে। 

যোগাযোগের দিক থেকেও এই চরগুলো বেশ বিচ্ছিন্ন। দৌলতদিয়া থেকে গোয়ালন্দ চর যেতে হয় অডাই ঘণ্টার ট্রলার জার্নি। পাবনার ঢালার চর থেকে মূল সড়কে পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টা লাগে নৌকা বা ঘোড়ায় চেপে। মানিকগঞ্জের খাঁর চর থেকে নৌকায় ভেসে যেতে হয় দুই ঘণ্টার পথ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক দুর্বল থাকায় এখানকার শিশুদের জন্য স্কুলে যেয়ে সচেতন হওয়া বা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ খুবই কম। অনেক শিশুই ছোট বয়স থেকেই বাবার সঙ্গে নদীতে মাছ ধরতে নামে। অসুস্থ হলে হাসপাতালে পৌঁছানোও তাদের জন্য হয় ঝুঁকিপূর্ণ।

তবুও এই হতাশাজনক পরিস্থিতির মধ্যেও আশার আলো দেখাচ্ছে তরুণদের একান্ত উদ্যোগ। সম্প্রতি ‘আমাদের পাঠশালা’ নামে এক প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হয়েছে। প্রথম দিনেই সেখানে ভর্তি হয়েছে ৪৫ শিশু।

সাংবাদিক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর এনায়েত মুন্সি বলেন, এই চরটি আমার কাছে বেশ ভিন্ন মনে হয়েছে। কারণ, এর তিনপাশে তিনটি চর, যা তিনটি জেলার অংশ। অবাক হওয়ার বিষয় হলো— এই চরগুলো এখনও অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। এই বিষয়টি আমাকে সংবাদ ও কনটেন্টের মাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করে মহসিন উল হাকিমের কাছে। তিনি আন্তরিকভাবে এগিয়ে এসেছেন।

‘আমাদের পাঠশালা’র মূল উদ্যোক্তা, সাংবাদিক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর মহসিন উল হাকিম বলেন, চর যখন ভেঙে যায়, তখন তার সব কিছু অন্য চরে চলে যায়, কিন্তু স্কুল যায় না। এ কারণেই সৃষ্টি হয় ‘নিরক্ষরের কারখানা’। এই শিশুগুলিকে অন্ধকার থেকে বের করে আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও যোগ করেন, সমাজের ধনী ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যদি একটু নজর দেন, তবে এই তিন চর— খাঁর চর, ঢালার চর ও গোয়ালন্দ চর— এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা অনেক বদলে যেতে পারে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, এই চরাঞ্চলের মানুষ ভূগোলের কারণেই বেশ অবহেলিত। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে তাদের জন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়। পাশাপাশি এডিপি প্রকল্পেও তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়; এটির নিয়মিত নজরদারি করা হয়। ভবিষ্যতে তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের উন্নয়নে স্থানীয় ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হবে।

আজকের খবর/ এমকে