২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হঠাৎ করেই অভিষেক হয়ে যায় মোস্তাফিজুর রহমান নামে অচেনা এক তরুণ পেস বোলারের। হঠাৎ বলার কারণ, তার আগ পর্যন্ত মোস্তাফিজকে নিয়ে কখনো আলোচনা হয়নি এবং দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও তাকে চিনতেন না। মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নেমেই বাংলাদেশসহ পুরো ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলে দেন তিনি।
ওই সিরিজে ‘প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ’ নির্বাচিত হন। পরের দুই বছর তার সেরা সময় অতিবাহিত হয়েছে। আইসিসি ও আইপিএলের সেরা উদীয়মান প্লোয়ারও নির্বাচিত হন। কিন্তু এরপরই চোটে পড়ে নিজের বোলিংয়ের ধার হারিয়ে ফেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। চোট থেকে ফিরলেও নিজের সেরা অস্ত্র কাটার ও স্লোয়ার ডেলিভারিতে যেন মরিচা ধরেছিল।
এরপর মাঝেমধ্যেই পুরনো রুপে ফেরার ইঙ্গিত দেন। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতাটা ছিল না। নিয়মিত উইকেট পেলেও বিনিময়ে প্রতিপক্ষকে প্রচুর রান দিতেন। তবে আশার কথা হলো- মোস্তাফিজের পুরনো রুপ আবারও ফিরে এসেছে। ঘরের মাঠে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে কাটার মাস্টারকে যেন খেলতেই পারছেন না অজি ব্যাটম্যানরা।
প্রথম ম্যাচে ২টি ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৩টি উইকেট নেন মোস্তাফিজ। তবে এই সংখ্যাটা তার ধার বোঝানোর জন্য যথেষ্ট নয়। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড, অ্যাশটন অ্যাগার ও ওপেনার জস ফিলিপে ফিজের শিকারে পরিণত হন। তিনজনই বল বুঝতে না পেরে বোকা বনে যান।
আউট হওয়ার পর অ্যাগারের প্রতিক্রিয়া দেখার মতো ছিল। ক্রিজ ছেড়ে যাওয়ার সময় তার চোখে-মুখে ছিল অবিশ্বাস। তখন নন স্ট্রাইক প্রান্তে দাঁড়ানো সতীর্থের দিকে তাকিয়ে সে যেন হেসে বলছিল ‘এটা কীভাবে সম্ভব!’
তিনটি উইকেট এতটাই দারুণ ছিল যে, পুরো অস্ট্রেলিয়া দলের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছে এবং মনোজগতে ফেলেছে গভীর ছাপ। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সেটাই জানালেন অজি দলপতি। বলেন, ওরা গতি কমিয়ে বলকে প্রচুর ঘুরিয়েছে। যার কোনো জবাব আমাদের কাছে ছিল না।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও মোস্তাফিজ প্রসঙ্গ উঠে আসে। অস্ট্রেলিয়ান এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে অজি অলরাউন্ডার মোয়েজেস হেনরিকেসের মুখের ভাবভঙ্গি বদলে গেল। তার অবিশ্বাসমিশ্রিত চেহারায় সবকিছুই ফুটে উঠছিল।