মহামারি করোনার প্রভাব বিস্তার রোধে সরকারের কঠোর লকডাউনের ঘোষণা আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কায় দেশের বৃহত্তম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঢাকা ও ঘরমুখো মানুষ করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি নিয়ে সকল বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বিভিন্ন উপায়ে ঘাট দিয়ে ফেরিতে পারাপার হতে দেখা গেছে।
শুক্রবার (২৫ জুন) ঘাট এলাকায় দেখা যায় মাহিন্দ্র, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল করে ২/৩ গুন বেশি ভাড়া দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌছাচ্ছেন। প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে সড়ক মহাসড়ক এড়িয়ে গ্রামের ভিতর দিয়ে আসছেন তারা।
যাত্রীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থবিধি মানা তো দুরের কথা অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই। এতে করে সরকারের করোনা সংক্রমনরোধে কঠোর অবস্থান ভেস্তে যেতে বসেছে।
সড়কে কড়া নজরদারিতে রয়েছে প্রশাসন, যানবাহন থামিয়ে নামিয়ে দিচ্ছে যাত্রীদের। কিন্তু এরপরেও মানুষ বিভিন্ন কৌসলে বিকল্প পথে ঘাট পারি দিচ্ছে,গ্রামের ভিতরের রাস্তা দিয়ে ফেরিঘাটে এসে ফেরিতে পারাপার হচ্ছে। তাদেরকে কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না। এদিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার সরকারের নির্দশনায় গত ২২ জুন থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে, তবে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বর্তমানে দৌলতদিয়ার ৭ টি ঘাটের চারটি ঘাট সচল রয়েছে, এ চারটি ঘাট দিয়ে দক্ষিণাঞ্চল-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা পণ্যবাহী যানবাহন ফেরিতে উঠছে। আর এই সুযোগে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যানবাহন ও যাত্রীরা ফেরিতে স্বাভাবিকভাবে পারাপার হচ্ছেন। পাশাপাশি মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিতেও পণ্যবাহী গাড়ির সঙ্গে যাত্রী ও অন্যান্য ব্যাক্তিগত গাড়ী পারাপার হচ্ছে।
মাগুড়া থেকে আসা কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা হলে তারা জানান, মোটরসাইকেল করে মধুখালি হয়ে ভেতরের রাস্তা দিয়ে গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত আসি পুলিশের বাধা পেলে নেমে গ্রামের রাস্তা দিয়ে ইজিবাইক করে ঘাটে আসলাম। এখন ঘাট পার হয়ে পাটুরিয়া থেকে রিক্সা, ভ্যান, মোটরসাইকেল যা পাই তাতে করে সাভারে যেতে হবে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর জানান পুলিশের একাধিক দল মহা সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে মাহিন্দ্র, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসে করে অনেকে ঘাটে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। এ ধরনের গাড়ি দেখলে পুলিশ গতিরোধ করে ফিরিয়ে দিচ্ছে। তিনি এ সময় আরো বলেন, আমরা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। মহাসড়কে মাহিন্দ্র, ইজিবাইক, রিক্সা চলবে না এমন নির্দেশনা আমাদের কাছে এসেছে, আমরা কতৃপক্ষের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের ( বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারি মহাব্যবস্থাপক ফিরোজ শেখ বলেন, আমাদের কতৃপক্ষের নির্দেশনা আছে পণ্যবাহী ট্রাক, জরুরী সেবার যানবাহন ছোট গাড়ি পারাপার হতে পারবে। কিন্তু এরপরও ফেরি ঘাটে ভেড়ার সুযোগে কিছু যাত্রী উঠে পরছে এতে আমাদের কিছু করার থাকছে না। তিনি আরো জানান বর্তমানে দৌলতদিয়া -পাটুরিয়া নৌরুটে ১৩ টি ফেরি চলাচল করছে এবং ৪ টি ঘাট সচল রয়েছে।