আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে মিথ্যার ফেরিওয়ালা বলে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনের দাবি মামা বাড়ির আবদার- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আমি ওবায়দুল কাদেরকে বলবো-আপনি ভোট কারচুপির এমনই মেকানিজম করেছিলেন যে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আপনার সুস্থতা কামনা করি। কিন্তু জালিয়াতির মেশিন ইভিএম দিয়ে ভোটারদের যেভাবে সর্ষে ফুল দেখিয়েছেন সেজন্য আপনাকে নিয়ে ভোটাররা কি ভাবছেন সেটি একটু বোঝার চেষ্টা করবেন।
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বারবার অসুস্থ হওয়ার পরেও আপনি মিথ্যার ফেরিওয়ালাই থেকে যাচ্ছেন। সৃষ্টিকর্তার কথা বিবেচনা করে কমপক্ষে কিছুটা সত্য কথা বলার চেষ্টা করুন। ঢাকা সিটি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও পুননির্বাচনের দাবি প্রতিটি মানুষের। ভোট ডাকাতি এখন আপনাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আপনারা এখন জনগণের চরম ঘৃনার পাত্রে পরিণত হয়েছেন। জোর করে বিনা ভোটে ক্ষমতায় থেকে কিভাবে আপনারা বেহায়ার মতো অবৈধ কর্মকাণ্ডের পক্ষে কথা বলেন? সুষ্ঠু ও ভয়ভীতিমুক্ত পরিবেশে ভোট দেবার জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় বিনা অপরাধে দুই বছরের বেশি হলো কারাবন্দি রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। জেলের ভেতর হত্যার চেষ্টা চলছে। ৭৫ বছর বয়সী বেগম জিয়ার অবস্থা চরম খারাপ। এখনি মুক্তি দিয়ে দ্রুত উন্নত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে আমরা তার জীবনহানীর আশঙ্কা করছি।
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন-তিনি বিশ্বের এক নম্বর অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রীর এই কথা চিরকুটে লিখে রাখলাম। হাসতে হাসতে হার্টফেল করলে অর্থমন্ত্রী দায়ী থাকবেন। এই বক্তব্য অজ্ঞাতপ্রসুত নয়, রাজনৈতিক ধান্দাবাজপ্রসুত। অর্থমন্ত্রী এই বক্তব্যের পরের দিনই আবার বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। মূলত স্বস্বীকৃত ১নং অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল সাহেব দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়েছেন। আসলে গণতন্ত্র ধ্বংসকারী মন্ত্রীদের মুখে এধরণের অবান্তর বক্তব্যই মানায়।
জিয়া, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মাটির সন্তান নয়- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, জিয়া এবং খালেদা জিয়াই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। কেননা, জিয়াউর রহমানই দেশের ক্রান্তিকালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে রক্ষা করেছিলেন। বিপন্ন গণতন্ত্রকে উদ্ধারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি এখনও হারানো গণতন্ত্র এবং মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, কোন স্বৈরাচারের নিকট মাথানত করেননি বলেই তিনি আপোষহীন নেত্রী আখ্যায় আখ্যায়িত হয়েছেন। তিনি সবসময় দেশের মানুষের পাশেই আছেন, অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর চোখ রাঙানিতে ভীত হয়ে বিদেশ পালিয়ে যাননি। কিন্তু দেশের মানুষের পাশে না থেকে কে বিদেশ পালিয়েছে কিংবা কার সন্তান কোথায় বিয়ে করেছেন বা কিভাবে আছেন তা দেশবাসী ভালভাবেই জানে। সুতরাং বাংলাদেশের মাটির সন্তান কে বা কারা তা দেশবাসীর অজানা নয়।