বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যখন শনাক্ত ব্যক্তি ছাত্রলীগের নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি সাদিক কায়েমের সঙ্গে একই টেবিলে চা খাচ্ছেন, তখন তার এই ঘটনাকে কি বিচার করবে সরকার বা প্রশাসন?
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই হামলার প্রতিবাদে ও চট্টগ্রামে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদুল্লাহর ওপর হামলার নিন্দা জানাতে আয়োজিত মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ঘটনার এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়, যেখানে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ‘গ্যাংস্টার’সহ নানা কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করা হয়। তদন্তের আগেই এই ধরনের পোস্টের উদ্দেশ্য কি, তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি আরও বলেন, শান্তিনগর, শাহজাহানপুর ও খিলগাঁও এলাকার মতো প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাসস্থান থাকলেও, কেন অপ্রভাবশালী বা সাধারণ নেতা-কর্মীরা এই ধরণের হামলার শিকার হন, সেটিও রহস্যের দাবি ধরিয়ে দেয়।
রিজভী উল্লেখ করেন, ওসমান হাদিকে দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহসী ও সোচ্চার নেতা হিসেবে দেখা যায়। তিনি প্রশ্ন করেন, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে কি কখনো কোনো বক্তব্য দিয়েছেন হাদিরা? তাহলে কেন বলা হচ্ছে, তিনি তাকে বিরক্ত করছিলেন? এটা কি ‘ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাইনি’ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে মেলে?
একজন ছাত্রনেতার সামাজিক মাধ্যমের পোস্টের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আপনি তো সবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করেছেন, আর আমরা এর চেয়ে ৩৬ বছর বেশি সময় ধরে ছাত্ররাজনীতি করে আসছি। তখনও আমরা অন্য দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কটাক্ষ করিনি।
মির্জা আব্বাসের সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রায় ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রাখতে পারেনি যে তিনি কাউকে মারধর করেছেন। বরং অসুস্থ মানুষদের সাহায্য ও সেবা দিতে তিনি সবসময় পাশে থেকেছেন। এমন একজন নেতা হঠাৎ করে তরুণ প্রার্থীর ওপর আঘাত করবেন, তা বিশ্বাসের অর্ধেকও নয়।
রিজভী আরও বলেন, ওসমান হাদির এই ঘটনায় শনাক্ত ব্যক্তি ছাত্রলীগের একজন নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভিপির সঙ্গে একই টেবিলে চা খাচ্ছেন—এ বিষয়টি জাতির কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষের হত্যাকাণ্ড ও দু’লাখের বেশি নারীর ইজ্জতহানির পাশাপাশিও এই সংগঠনের কিছু নেতার বিবেক জাগেনি; তারা যে কোনও অপরাধে জড়াতে পারে বলে ধারণা করা যায়।
তিনি বলেন, এখন দিনে দিনে সব কিছু স্পষ্ট হয়ে উঠছে। জনগণ যেমন প্রকৃত চেহারা বুঝতে পারছেন, তেমনি সরকার ও প্রশাসনও বিষয়টি উপলব্ধি করছে। এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন রিজভী।
ছাত্রলীগের এই কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজিত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল বিক্ষোভনার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
