মহান বিজয় দিবসের এক অনন্য অনুষ্ঠানে সামনের দিনগুলোতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ সম্পূর্ণ প্রস্তুত। দেশটির মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সম্মান জানাতে এই ঐতিহাসিক স্থানটি বিশেষ করে সাজানো হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর থেকে গণপূর্ত অধিদপ্তর বিভিন্ন প্রস্তুতি নেমে পড়েছে, যাতে মহান বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা এবং শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন সম্ভব হয়। ইতোমধ্যেই, সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে এই বিভাগ, পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক নিশ্চিত করেছেন, এবার এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানের নিরাপত্তায় ৪০০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। স্মৃতিসৌধের আশপাশে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন রঙের ফুলের সমারোহে পুরো এলাকা সাজানো হয়েছে। লাল ইটে সাদা রঙের ছোয়া যেন সৌন্দর্যের অপরূপ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন স্থানে লাল টবে ফুটে আছে বাহারি ফুলগাছ, আর নতুন করে লেকের পানিতে রোপণ করা হয়েছে লাল শাপলা।
ফুলের চারা রোপণ কাজে অংশ নেওয়া শ্রমিক মো. মতিন মিয়া জানান, মহান বিজয় দিবসের জন্য তারা এ ফুল গাছ রোপণে ব্যস্ত। তিনি বলেন, এই দিনে দেশের মহান নেতাকর্মী, রাষ্ট্রপতি, উপদেষ্টারা উপস্থিত থাকবেন, তাই স্থানটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এ কাজ করছে তারা। তিনি আরও বলেন, এ কাজের মধ্যে তারা অনেক আনন্দ পান।
এছাড়া, স্মৃতি সৌধের পুরো এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ৬ নভেম্বর থেকে ধোয়া-মোছা, রঙের কাজ শুরু হয়। ফুলের চারার পাশাপাশি বিভিন্ন আলো সাজানো হয়েছে, যেন স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পায়। গালিচাসহ সবুজ ঘাসের নান্দনিক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। পুরনো গাছগাছালির পরিচর্যা ছাড়াও নতুন ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। ভবনের দেয়ালে ঝুলানো হয়েছে আলোকবাতি যা রাতেরদৃশ্য সুন্দর করে তোলে।
আলোকসজ্জা নির্মাণে নিয়োজিত এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জানান, তারা বেশ কিছু দিন ধরে কাজ করছেন এবং প্রায় সম্পন্নের দ্বারপ্রান্তে। ১৬ ডিসেম্বর লাখো মানুষের সমাগম হবে এখানে।
নিরাপত্তার স্বার্থে, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা ইতোমধ্যেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছেন। চার স্তরের নিরাপত্তা চাদরে মোড়া হয়েছে পুরো স্থান।
শনিবার সকালে, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক এই ঐতিহাসিক স্থানে পরিদর্শন করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে তারা এখানে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি বলেন, এই দিনে দেশের সব স্তরের মানুষ, বিশেষ করে শ্রদ্ধা নিবেদনে আসা গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, নিরাপদ থাকবেন। পুলিশ ও সাদা পোশাকের সহায়তায় নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় থাকছে।
গণপূর্ত বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার খান জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনার, রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, আমলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই স্থান পরিদর্শন করবেন। পুরো এলাকাট Richt প্রস্তুত করা হয়েছে।
বিদেশী কূটনীতিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সবাই ওই দিন আদরে স্মৃতিসৌধে এসে জাতির জন্য আত্মত্যাগী শহীদদের স্মরণ করবেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা সকাল ভোরে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর, তারা দেশের গার্ড অব অনার পাবেন।
সকাল ৮:৩০ এ স্মৃতিসৌধের গেট সাধারণের জন্য খোলা হবে, তখন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ শহীদদের সম্মানে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সারাদেশ থেকে সবার এই শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হবে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকায়।
