১২ দফা সুপারিশে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আহ্বান উত্তরদাতা সরকারের জন্য – Daily Bhorer Potrika

১২ দফা সুপারিশে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আহ্বান উত্তরদাতা সরকারের জন্য

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: অক্টোবর ২১, ২০২৫

বিশ্বের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ঘোষণা করেছে। সেসংক্রান্ত একটি খোলা চিঠির মাধ্যমে তারা প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যৌথভাবে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। এই চিঠিতে তারা আওয়ামী লীগের উপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আইনি সংস্কার আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার দ্রুত তদন্ত নিশ্চিত করার বার্তা দিয়েছেন। এই সংস্থাগুলোর দাবি, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশের সামনে একটি শান্ত, সম্মানজনক ও স্বাধীন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই চিঠিতে ১২ দফা সুপারিশের মাধ্যমে দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়। এই সুপারিশগুলো হলো- জবাবদিহিতা ও বিচারের নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা বাহিনীসহ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানে সংস্কার, গুমের ঘটনা তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বচ্ছতা, ব্যক্তির স্বাধীনতা ও তথ্য সুরক্ষা আইন সংস্কার, যে সব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা অবিচারপূর্ণ সেগুলো প্রত্যাহার, রাজনৈতিক ও মানবাধিকার খাতে আইনি সংস্কার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের সুরক্ষা, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে অবিলম্বে বাস্তব পদক্ষেপ, এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আইসিসির সঙ্গে অংশীদারিত্ব বজায় রাখা।

সংস্থাগুলোর স্বাক্ষরকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে সিভিকাস, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, ফর্টিফাই রাইটস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রবার্চ এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস, এবং টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট। তারা মনে করে, এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন দেখবে এবং ভবিষ্যতের জন্য আরও শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে উঠবে।

আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাগুলো আরও জানায়, নিরাপত্তা খাতে কাঠামোগত পরিবর্তন জরুরি, যার মাধ্যমে দমন-পীড়নের ধারা বন্ধ করে সমতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তারা আগের মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতেও আহ্বান জানায়।

অন্যদিকে, রোহিঙ্গা বিষয়ে তারা উল্লেখ করে, বর্তমানে মিয়ানমারে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পরিবেশ না থাকায়, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরার পরিবেশ তৈরির জন্য দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব সুপারিশের মাধ্যমে দেশের মানবাধিকার ভিত্তিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মহল প্রত্যাশা করে, বাংলাদেশ এক ইতিবাচক ও মানবিক দিক থেকে সুদৃঢ় মানসম্পন্ন পথে এগিয়ে যাবে।