বাংলাদেশে এলপিজি আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা – Daily Bhorer Potrika

বাংলাদেশে এলপিজি আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: অক্টোবর ১১, ২০২৫

ইরানের পেট্রোলিয়াম ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) রপ্তানিতে সহায়তা করার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশে এলপিজি নিয়ে আসা একটি আরব আমিরাতভিত্তিক জালানি নেটওয়ার্ক এবং কিছু জাহাজও। মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, এই নেটওয়ার্কটি আন্তর্জাতিক বিধিসম্মত মান লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায়ও জ্বালানি পণ্য সরবরাহ করছিল।

মার্কিন অর্থ বিভাগীয় সংস্থা অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (ওএফএসি) বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এই নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। নীতির উদ্দেশ্য—ইরানের অর্থনৈতিক শক্তি কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তালিকাভুক্ত সংগঠনগুলোর অর্থপ্রবাহ বন্ধ করাই। বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা জাহাজ ও সংস্থাগুলো ইরানের এলপিজি বিভিন্ন চালান বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল। পাশাপাশি এই চক্রের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের পেট্রোলিয়াম ও পণ্য রপ্তানি চালিয়ে যাচ্ছে ইরান, যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় আয়ের উৎস।

মার্কিন ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ইরানের ‘জ্বালানি রপ্তানি কার্যক্রম’র ওপর চাপ সৃষ্টি করতে উদ্দিষ্ট। এটি ওয়াশিংটনের ‘সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক চাপ’ প্রয়োগের ধারাবাহিকতা।

নতুন তালিকায় যোগ হয়েছে দুই আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান—স্লোগাল এনার্জি ডিএমসিসি এবং মারকান হোয়াইট ট্রেডিং ক্রুড অয়েল অ্যাবরোড কোম্পানি এলএলসি। এই দুই সংস্থা ২০২৪ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ইরানি এলপিজি চালান পাঠানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। ওএফএসি বলছে, এই এলপিজি চালান বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেছে।

আরও জানা যায়, ২০২৫ সালের প্রথম দিকে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘গ্যাস ডিওর’ এর মাধ্যমে ইরানি এলপিজি ১৭ হাজার টনের বেশি পরিমাণে বাংলাদেশে পৌঁছেছিল। এছাড়া, ২০২৪ সালের শেষদিকে কোমোরোসের পতাকাবাহী ‘আদা’ (এর আগে ক্যাপ্টেন নিকোলাস নামে পরিচিত) জাহাজটিও বাংলাদেশের কিছু আমদানিকারকের কাছে ইরানি এলপিজি পৌঁছে দেয়। এই জাহাজটিও মার্কিনী নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত হয়েছে।

প্রায় ৩৪ হাজার টন এলপিজি বহনকারী ‘বিএলপিজি’ নামে একটি ছোট জাহাজ গত বছর চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ার সময় আগুনে পুড়ে যায়। বছরের পর বছর এই জাহাজটি আইনি জটিলতার কারণে বন্ধ থাকলেও ৫ সেপ্টেম্বর আবার চলাচলের অনুমতি পায়। তথ্যানুসারে, বর্তমানে এই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর অবস্থায় রয়েছে।

যদিও এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বাংলাদেশি কোনও প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সংস্থার নাম নেই, তবে এই চালানের উল্লেখের কারণে বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির আওতায় পড়েছে। মার্কিন আইন অনুযায়ী, নিষিদ্ধ লেনদেনে যুক্ত বিদেশি কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’ আরোপের কঠিন আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, যার ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ব্যবস্থা থেকে বিচ্যুত হতে পারে।

আজকের খবর / বিএস