শাহ আবদুল করিমের গানের অবৈধ ব্যবহার, গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি – Daily Bhorer Potrika

শাহ আবদুল করিমের গানের অবৈধ ব্যবহার, গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫

অফিসিয়াল অনুমতি বা লাইসেন্স না নিয়েই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী শাহ আবদুল করিমের দুটি জনপ্রিয় গান ব্যবহার করার জন্য বাউল পরিবারের সদস্যরা এমটাই অভিযোগ তুলেছেন। এই দুটি গান হলো ‘রঙিলা বাড়ৈ’ ও ‘কোন মিস্তরি নাও বানাইছে’। এই অবৈধ ব্যবহারকে কেন্দ্র করে তারা ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেশের অন্যতম টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন লিমিটেডের বিরুদ্ধে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ব্যারিস্টার রাজিন আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী ও শাহ আবদুল করিমের পুত্র শাহ নুরজালালের পক্ষ থেকে, ২৭ আগস্ট গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইযাসির আজমানের কাছে এই নোটিশ পৌঁছে দেন। নোটিশে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন অনুমতি, লাইসেন্স বা স্বীকৃতি ছাড়াই শাহ আবদুল করিমের কপিরাইটকৃত গানগুলো টেলিভিশন ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে ইউটিউবে আপলোড হওয়া একটি টিভিসি এবং ২০২২ সালে প্রচারিত ফেসবুক ও ইউটিউব বিজ্ঞাপনে এটি ব্যবহার করা হয়। এই অবৈধ ব্যবহার সংশ্লিষ্ট গানগুলোর কপিরাইট লঙ্ঘন এবং কৃৃতিত্ব না দিয়ে তার নৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল। পাশাপাশি, গ্রামীণফোনের এ ধরনের বাণিজ্যিক ব্যবহার, যা সংগীতকর্মের স্বীকৃতি না দিয়ে অতিরিক্ত ব্যবসায়িক সুবিধা লুটের মতো, তা বলুলেই কঠোর অবিচার বলে মনে করা হচ্ছে। নোটিশে দাবি জানানো হয়েছে, এই অবৈধ প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সব প্ল্যাটফর্ম থেকে লঙ্ঘনকারী কনটেন্ট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে হবে, এবং শাহ আবদুল করিমকে লেখক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আদেশ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০ কোটি টাকা (প্রতিটি গান অনুযায়ী ১০ কোটি) পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া, ভবিষ্যতে এই ধরনের লঙ্ঘন বন্ধে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। প্রয়োজনে, যদি গ্রামীণফোন ৭ দিনের মধ্যে এই দাবিগুলো মানতে অক্ষম হয়, তাহলে শাহ আবদুল করিমের পরিবার কপিরাইট আইন, ২০২৩ অনুযায়ী যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর মধ্যে ক্ষতিপূরণ দাবি, অবৈধ কনটেন্ট অপসারণ, আদালতের নিষেধাজ্ঞা এবং কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ব্যারিস্টার রাজিন আহমেদ উল্লেখ করেন, “শাহ আবদুল করিমের গান কেবল সংগীত নয়, এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই গানগুলো অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা অত্যন্ত অবমাননাকর ও আইনবিরুদ্ধ। আমরা তার উত্তরাধিকার ও সম্মান রক্ষা করতেই কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।” শাহ নূরজালাল, যিনি এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন, তিনি বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষ, আইন-কানুন তেমন বুঝি না। তবে বাবার সব গানই কপিরাইট করা। অনেকেই গান করেন, কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হলে অনুমতি নেয়া উচিত। এভাবে অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আমাদেরও ক্ষতি হয়। আমাদেরও উচিত টাকা পাওয়া।” এই ঘটনাটি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও কপিরাইটের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ন প্রাকটিসের আলোচনায় এনে দাঁড় করিয়েছে।