রাশিয়া-চীন সম্পর্ক এখন ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চতায়: পুতিন – Daily Bhorer Potrika

রাশিয়া-চীন সম্পর্ক এখন ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চতায়: পুতিন

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ৩১, ২০২৫

রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক এখন শীর্ষে পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, এই দুই দেশের মধ্যে অর্থনীতি, কৌশলগত সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বের স্তর গতানোর তুলনায় অনেক বেশি গভীর ও দৃঢ় হয়ে উঠেছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) এ বিষয়ে বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন এই তথ্য প্রকাশ করে।

পুতিন বলেন, বর্তমানে রাশিয়া-চীনের সম্পর্ক “অভূতপূর্ব উচ্চতায়” রয়েছে। চীনের সিনহুয়া সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান, ২০২১ সাল থেকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দুই অংকে বেড়েছে এবং এর পরিমাণ প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, এখন রাশিয়া চীন থেকে প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং গত বছর রাশিয়া চীনের পঞ্চম বৃহত্তম বৈদেশিক ব্যবসায়িক partner-এ পরিণত হয়েছে। এছাড়া, বাণিজ্য মূলত ডলারে হিসাব করা হলেও এখন প্রায় সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া নিজস্ব দেশের মুদ্রায় পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে ডলার ও ইউরোর অংশ ধীরে ধীরে কমে আসছে, যা গোটা হিসাবের পাশাপাশি বৈদেশিক লেনদেনের একটা পরিবর্তন চিত্র তুলে ধরে।

পুতিন আরও জানান, রাশিয়া এখনও চীনের শীর্ষ জ্বালানি সরবরাহকারী। ২০১৯ সালে চালু হওয়া ‘পাওয়ার অব সাইবেরিয়া’ পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ ইতোমধ্যে ১০০ বিলিয়ন ঘনমিটার ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, ২০২৭ সালের মধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় গ্যাস পাইপলাইন সম্পন্ন হলে চীনকে রাশিয়া আরও বেশি জ্বালানি ও গাড়ি রপ্তানি করবে, যা দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতাকে আরও দৃঢ় করবে। পুতিনের ভাষায়, “আমার আসন্ন সফরে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সহযোগিতা আরও বিস্তৃত করার জন্য আলোচনা হবে।”

শুধু অর্থনীতি নয়, কৌশলগত ক্ষেত্রে রাশিয়া-চীনের অংশীদারিত্বের কথাও উল্লেখ করেন পুতিন। তিনি বলেন, এই সহযোগিতা “বিশ্ব রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ”। তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ ও গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস ইন ডিফেন্স অব দ্য ইউএন চার্টার-এ দুই দেশের যৌথ কাজ বিশ্বশক্তির বিকাশে সহায়ক হবে এবং গ্লোবাল সাউথের শক্তি বৃদ্ধি করবে। তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সংস্কারের পক্ষে, যেখানে এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

পুতিন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে বৈষম্যমূলক বলে আখ্যা দেন ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের সংস্কারের পক্ষে আহ্বান জানান। তিনি বেইজিংয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এমন নতুন আর্থিক ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখছেন, যা ন্যায্য, উন্মুক্ত এবং “নবউনিবেশবাদী স্বার্থের ঊর্ধ্বে” থাকবে।

প্রসঙ্গত, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে পুতিন রোববার চার দিনের সফরে চীনে পৌঁছাবেন। এখানে তিনি প্রথমে তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। এরপর বেইজিংয়ে তিনি থাকবে জোশপুরাক ও জাপানের সামরিক পরাজয়ের ৮০তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।