পুতিন ও কিমের চীনের প্যারেডে উপস্থিতি, পশ্চিমাদের আমন্ত্রণ নিলো না বেইজিং – Daily Bhorer Potrika

পুতিন ও কিমের চীনের প্যারেডে উপস্থিতি, পশ্চিমাদের আমন্ত্রণ নিলো না বেইজিং

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ২৮, ২০২৫
Russian presidential candidate and incumbent President Vladimir Putin speaks after polling stations closed, in Moscow, Russia, March 18, 2024. REUTERS/Maxim Shemetov

বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ, যেখানে যোগ দিতে যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। এই মুহূর্তে তারা প্রথমবারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে একত্রে উপস্থিত থাকবেন। এ ঘটনা পশ্চিমা দুনিয়ার জন্য নতুন এক সংকেত, যেখানে চীন একসঙ্গে শক্তি প্রদর্শন করছে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এই সামরিক কুচকাওয়াজ আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে মোট ২৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান অংশ নেবেন। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর কোনো নেতা এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি। একমাত্র স্পেশাল আমন্ত্রণ পেয়েছেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো, যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

চীনের এই বিজয়াদিবসের কুচকাওয়াজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জাপানের বিরুদ্ধে চীনের সামরিক শক্তির ৮০তম বর্ষপূর্তির পাশাপাশি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির স্মরণে আয়োজিত। প্রায় শত শত বিমান, ট্যাংক, ও অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তিসহ আধুনিক সেনা সরঞ্জাম দেখানো হবে এই অনুষ্ঠানে। এটা হবে দেশের সামরিক শক্তির পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী, যা ভবিষ্যতের শক্তির দিক নির্দেশ করবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে চীন, রাশিয়া, এবং কিম কং উনের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্কের প্রকাশ ঘটছে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো শুধু চীন ও গ্লোবাল সাউথের মধ্যে ঐক্য আর শান্তির বার্তা প্রদান নয়, বরং নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে শক্তিশালী সংহতিরও নজির স্থাপন করা।

চীনের এই কৌশলগত সম্পর্কের মধ্যে রাশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচিত। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার ফলস্বরূপ রাশিয়ার অর্থনীতি অনেকটাই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই পরিস্থিতি উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে, কারণ কিম জং উন চীন-বন্ধু হলেও তার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞাগুলোর কেন্দ্রে রয়েছে।

এ বছরের মে মাসে, পুতিন ও জিন পিং এক সঙ্গে দেখা করেছিলেন রাশিয়ার বিজয় দিবসে। তখন পুতিনের জন্য মস্কোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এবার পুতিন চীনে যাচ্ছেন একাধিক বিষয় আলোচনা করার জন্য, যার মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সামরিক প্রশিক্ষণ, ও ভবিষ্যৎ সম্পর্ক। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিনি চার দিনের জন্য চীনে থাকবেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে কেমন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, তা এখনো স্পষ্ট করা হয়নি।

আর টো আলাউচে জানিয়েছে, পুতিন সামুপ্রতিক অংশ নেবেন সাংহাই কো-অপারেশনের সামিটে, যা ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। ঝাপানের সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী লিও বিন জানিয়েছেন, এতে দেশের প্রধান, ২০টি দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতারা, এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান উপস্থিত থাকবেন। তবে, এই সামিটে পুতিন উপস্থিত থাকবেন কী না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

অন্যদিকে, চীনের প্রেসিডেন্টের তীরে একাধিক বৈঠক নিবদ্ধ রয়েছে। তিনি এই সময় বিশ্ব নেতা ও তাদের প্রতিনিধি বৈঠক করবেন। উল্লেখ্য, কিম জং উন সর্বশেষ ২০১৯ সালে চীন সফর করেছিলেন। কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, এই সফর চীনের গ্লোবাল অঙ্গনে গুরুত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আজকের খবর/বিএস