চলচ্চিত্রের বিকাশে অনুদানের পাশাপাশি প্রণোদনা চালু জরুরি – Daily Bhorer Potrika

চলচ্চিত্রের বিকাশে অনুদানের পাশাপাশি প্রণোদনা চালু জরুরি

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ২৫, ২০২৫

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য সরকারি অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এই আলোচনা আয়োজনে ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র আন্দোলন ও চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ। গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগের সেমিনার কক্ষে এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনায় দেওয়া প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান নীতিমালা’ সংস্কার করে একটি আধুনিক, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থায়ন প্রক্রিয়া চালুর জন্য ‘জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ অর্থায়ন নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হবে। এতে চলচ্চিত্রের জন্য আলাদা দুটি বিভাগের থাকা দরকার—একটি হলো শিল্পমানসম্পন্ন স্বাধীন নির্মাণের জন্য, যেখানে অনুদান (গ্র্যান্ট) দেওয়া হবে, এবং অন্যটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের জন্য, যেখানে প্রণোদনা বা গ্যাপ-ফাইন্যান্সিং দেওয়া হবে।

বক্তারা উল্লেখ করেন, বর্তমানে চালু অনুদান পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে, যা শিল্পের সামগ্রিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। এজন্য নতুন নীতিমালা প্রয়োজন—যা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করবে। আলোচনায় আরও বলা হয়, চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য প্রণোদনা চালু করার প্রয়োজন রয়েছে, যেন নতুন ও প্রতিশ্রুতিশীল নির্মাতারা আরও উৎসাহিত হন। অর্থায়নের সংখ্যা বৃদ্ধি, ডিজিটাল পদ্ধতি চালু, কার্যকর আপিল ব্যবস্থা, প্রদর্শন ও পুনর্বিনিয়োগের বিষয়গুলোও রোডম্যাপে স্থান পেয়েছে।

আলোচনায় সংগঠনের প্রতিনিধি আরিফ সনেট বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পিত রোডম্যাপটি কেবল অনুদান সংস্কারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি চলচ্চিত্রশিল্পের পুনর্গঠনের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা। এটি মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল নির্মাতাদের জন্য এক অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে, যা দেশের সিনেমা সেক्टरকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যাবে।’

চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান মন্তব্য করেন, ‘জুরি বোর্ড ও চলচ্চিত্র সংগঠনের প্রতিনিধির সাথে দ্রুত সমন্বয় করা জরুরি, অন্যথায় এ বছরের জন্য অনুদান নীতিমালার সমস্যা থেকেও যেতে পারে।’

বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজের সাধারণ সম্পাদক নুরুল্লাহর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম কচি, অনুদান কমিটির সদস্যরা—আকরাম খান, পার্থিব রাশেদ, খন্দকার সুমন; পাশাপাশি বক্তারা ছিলেন বাচসাস সভাপতি কামরুল আহসান হাসান দর্পণ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রতিনিধি সুদীপ্ত কুমার দাস ও চলচ্চিত্র সংষ্কৃতি অঙ্গনের অন্য কর্মকর্তারা।

এছাড়া বক্তব্য দেন প্রযোজক ও স্বাধীন নির্মাতা অন্তু আজাদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা টনি মাইকেল, শিক্ষক ও নির্মাতা রাজিবুল হোসাইনসহ আরও অনেকেই। এই আলোচনা দেশের চলচ্চিত্রের স্বচ্ছ ও উন্নত ভবিষ্যত গড়তে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।