মুজিববর্ষে বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে বাংলাদেশ। রবিবার ( ২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে এই দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘দাবা খেলায় উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার আমাদের দেশের সন্তান। আমাদের দেশে ইতোমধ্যে ১৪০০ জনের মতো স্বীকৃত দাবা খেলোয়াড় রয়েছে। দাবার এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই। আশা করছি, দাবা খেলায় সামনে বাংলাদেশ বিশ্ব মঞ্চে বড় কিছু অর্জন করবে। আমাদের পরিকল্পনা আছে, আমরা মুজিববর্ষে বড় পরিসরে একটি আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্ট আয়োজন করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘ক্রীড়ার উন্নয়নের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবসময় নজর রয়েছে। ক্রীড়াঙ্গনকে কেমন করে তিনি আলোকিত করবেন, কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন সে বিষয়ে সর্বদাই তিনি চিন্তাভাবনা করেন। আগে আমাদের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে স্টেডিয়াম ছিল। আমরা কিন্তু এখন উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছি। ১২৫টি মিনি স্টেডিয়াম ইতোমধ্যে নির্মাণ হয়েছে। চলতি অর্থ-বছরে আরো ১৮৬টি নির্মাণ করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে। আমরা কিন্তু ক্রিকেটে ইতোমধ্যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমাদের জন্য এটি অনেক বড় অর্জন। সর্বশেষ এসএ গেমসেও আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক পদক আনতে সক্ষম হয়েছি।’
দাবা খেলার প্রসার ও উন্নয়নের জন্য স্থায়ী জায়গার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী । অচিরেই দাবার জন্য স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি ।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা এই করোনাকালীন সময়ের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যেভাবে এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে এখনও পর্যন্ত সক্ষম হয়েছি যা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
যেখানে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশ এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হিমসিম খাচ্ছে। তাদের হাসপাতালগুলোতে জায়গা নেই। সুযোগ সুবিধা কমে গেছে। হঠাৎ করে আসার কারণে আমাদের প্রথমদিকেও কিছু কষ্ট হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে, যেভাবে তিনি ধাপে ধাপে দেশের প্রতিটি হাসপাতালকে এমনভাবে স্বয়ং সম্পূর্ণ করেছেন যে, এখন হাসপাতালের বেড খালি রয়েছে। কারণ, করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা বৃদ্ধি করতে পেরেছি। চিকিৎসা সেবাই নয়, প্রথম দিন থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সে সব মানুষকে প্রধানমন্ত্রী সেবা দিয়ে এসেছেন। এক লাখ কোটি টাকার ওপরে তিনি প্রণোদনা দিয়েছেন। যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। সবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিন উপলক্ষে সাউথ এশিয়ান দাবা কাউন্সিল ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এই দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়। স্বাগতিক বাংলাদেশসহ মোট ১৫ টি দেশের ১৭ জন গ্র্যান্ডমাস্টারসহ ৭৪ জন দাবাড়ু এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিল ও বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদ, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাব উদ্দিন শামীম উপস্থিত ছিলেন।